ব্যঙ্গধর্মী রম্য কবিতা-৩
আলুবোখারার শেষ পরিণতি
শুনেছি যেদিন মদ নিষিদ্ধ হয়েছিল
সেদিন নাকি মদীনার লোকেরা
এমন ভাবে মদগুলো রাস্তায় ছুঁড়েছিলো
যে রাস্তায় মদের বন্য বয়ে গেছিলো।
আর এদেশে যেদিন আলু নিষিদ্ধ হলো
সেদিন লোকেরা ঠিক সেভাবেই
আলুবোখারার ছবিগুলো রাস্তায় ছুঁড়ে মারলো
আর তার ছবিতে রাস্তায় বন্যা বয়ে গেল।
লোকেরা শহরের আনাচে কানাচে
টাঙানো ছবিগুলো টেনে হিঁচড়ে নামালো
আর পদপিষ্ট করলো।
যারা এতদিন গোপনে তার ফটোতে
থুথু দিয়ে আবার ভয়ে টিস্যু দিয়ে মুছে দিত,
তারা সেদিন প্রকাশ্যে থুথু দিলো
আর ব্যবহৃত টিস্যু দিয়ে ঘষে
এতদিনের আক্ষেপ ঝাড়তে লাগলো।
আলুবোখারার কন্যা এই দৃশ্য
সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিলো।
পরক্ষণে ভাবলো, বাপের জন্য যদি
জীবনটাই দেই তাহলে
"অভাগা দেশের হবে কী"?
তাই সে ফিরে এলো বটে কিন্তু
কয়দিন পরেই সে গণপিটুনিতে মারা পড়ল।
সাথে সাথে নরকের দূতেরা এসে
তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেলো।
হায় হতভাগী!!
তারপর নরকে গিয়ে কন্যার সাথে
আলুবোখারার বাকবিতণ্ডা শুরু হলো।
কন্যার অভিযোগ সে আলুবোখারাকে
দুনিয়ায় পীর বানিয়ে দিয়েছে
কিন্তু সে নরকে কেনো?
আলুবোখারা বললো, আমি তোর বাপ,
তুই আমাকে গোটা আওয়াম জাতির
বাপ বানিয়ে দিছস।
তাই পুরো আওয়াম জাতির পাপ আমার ঘাড়ে।
এভাবে নরকে তাদের দিনাতিপাত হতে লাগলো।
এদিকে আওয়াম জাতি তওবা পড়লো।
দেশে আলুমুক্ত হলো।
শহরের কোথাও আলুবোখারাকে দেখা গেলো না।
সবাই আলুবোখারাকে মিস করতে লাগলো।
তখন দেশে আইন হলো দেশের নামীদামী
হোটেলের নিরিবিলি রুমের বিশেষ স্থানের ভেতর
তার চিত্র অঙ্কিত হলো।
তারপর দেশি বিদেশিরা একান্ত একাকিত্বে
সেখানে গিয়ে পুৎ...পুৎ... পুৎ করে
তাকে স্মরণে রাখলো।।
_________________________
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
চলন্ত লোকাল বাস,
ঢাকা।
কোন মন্তব্য নেই
ধন্যবাদ