Marquee text

Welcome to My Site

সৌন্দর্যের এপিঠ ওপিঠ


সৌন্দর্যের এপিঠ ওপিঠ
আবু ওয়াহেদ

ন্দনতত্ত্ব বা Aesthetics পড়তে গিয়ে সৌন্দর্য সম্পর্কে অনেক তত্ত্ব ও বিতর্ক পড়তে হয়েছে। কিন্তু সবার চিরচেনা এই বিষয়ে ভিন্ন এক উপলব্ধি অনুভব করছি। আমাকে কেউ যদি প্রশ্ন করে যে- সুন্দর কী? সৌন্দর্য কী? তাহলে আমি বলব সম্ভোগের পর যা বাকি থাকে তাই সৌন্দর্য।
কোনো কিছুকে যদি সুন্দর মনে হয়, তাহলে তাকে উপভোগের পরেও যদি তাকে সুন্দর মনে হতেই থাকে তাহলে তা অবশ্যই সুন্দর।
আর যদি সুন্দর মনে করে উপভোগের পর পুনরায় উপভোগ বা পাওয়ার ইচ্ছা না জাগে, তাহলে তাকে সুন্দর বলা যাবে কিনা সে বিষয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। 
অনেকে সৌন্দর্যকে নিছক কামনার পর্যায়ে নামিয়ে এনেছেন। আমি বলব এটা খণ্ডিত কোনো সৌন্দর্য উপলব্ধির একটা ধাপ মাত্র।
উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যায়- কোনো নারীর সৌন্দর্যে একজন উন্মাদ হলেন, আর তাকে পাওয়ার পর, উপভোগের পর আর ভালো লাগলো না, তাহলে ঐ ব্যক্তির প্রথম উপলব্ধি ছিলো নিছক একটি উন্মাদনা। নিজ উন্মাদনার রংকে অন্যের মাঝে লাগিয়ে উপলব্ধি করার কারণে সুন্দর মনে হয়েছিলো। আর উপভোগের পর সে রং উবে গিয়েছিল। এই মোহভঙ্গের পর তার যে উপলব্ধি সেটাই প্রকৃত। উপভোগের পরেও যদি তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছে না হয়, পুর্বের ন্যায় সমানভাবে সুন্দর মনে হতেই থাকে, তাহলে তা প্রকৃত সুন্দর। আর এই বিষয়টিকেই হয়তো Aesthetics-এর আলোচনায় Objective বা বস্তুনির্ভর সৌন্দর্য বলা হয়েছে।
-
কেউ যখন কোনো সুন্দর কিছু দেখে, তখন তা উপভোগ করার মানসিকতা সহজাত। মানুষকে সৃষ্টিকর্তা এই গুণ দিয়েই সৃষ্টি করেছেন। এটি দোষ নয়; এটি মানুষের গুণ। কিন্তু, আমার বিতর্ক অন্য জায়গায়। যদি কোনো পুরুষ কোনো নারীকে প্রসঙ্গ ছাড়াই প্রথমিকভাবে সুন্দর ভাবে, তাহলে তা যে যৌনতা থেকে উৎসারিত, একথা বাস্তব জ্ঞানসম্পন্ন যে কেউ মেনে নেবেন। কিন্তু যদি একটি ফুলকে সে সুন্দর বলে, তাহলে তা কি যৌনতা? অবশ্যই নয়। কিন্তু তিনি ফুলের সৌন্দর্যও পুর্ণরুপে উপভোগ করতে ছাড়েন না।
-
একজন নারীর সৌন্দর্য উপভোগের সময় যে ধরণের সৌন্দর্য উপলব্ধি করেন, উপভোগের পর তা ভিন্ন মাত্রা পায়। তখন তার মাঝে নিছক যৌনতা থাকে না, আর সেটাই হলো প্রকৃত ও সর্বজনীন সৌন্দর্য।
একইভাবে আমি বলব যদি কেউ কোনো ফুলকেও সুন্দর বলে, আর তা পাওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে তাও এক ধরনের উন্মাদনা; এক ধরনের যৌনতা যা খানিক পরেই আর থাকবে না। আর যদি তা আগলে রাখে তাহলে সেটাই প্রকৃত সুন্দর ও সৌন্দর্যবোধ।
এই যে একই জিনিসের উপলব্ধির দুটো ভিন্ন মাত্রা, এটাকেই বুঝি Aesthetics-এ ব্যক্তিনির্ভর বা Subjective সৌন্দর্য বলার চেষ্টা করা হয়েছে। 
অর্থাৎ সৌন্দর্য উপভোগ করার আগে থাকে Subjective আর উপভোগের পর হয়ে যায় Objective.
সাময়িক উন্মাদনা ছাড়াই কোনোকিছু সুন্দর ভেবে ভালোবাসলে তার মধ্যে থাকে এক ধরনের অনাবিলতা, পবিত্রতা। আর এই পবিত্রতাই তখন হয়ে ওঠে সে ভালোবাসার প্রকাশের ভাষা।
আর তাই যা সুন্দর, তাকে দুর থেকেও সুন্দর দেখা যায়; সুন্দরই বলা যায়।
___________________
"ডায়েরীর পাতা থেকে"
২৭/১২/২০১৫
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
সাভার, ঢাকা।


কোন মন্তব্য নেই

ধন্যবাদ

Blogger দ্বারা পরিচালিত.